জঞ্জাল

সেদিনটা ভেবে আবার চোখের কোনটা জ্বালা করে উঠল।
আর কিছুক্ষণই বাকি ছিল,
প্রচন্ড বেগে ছুটে আসবে ট্রেনটা -
দূরপাল্লার একটা এক্সপ্রেস।
রেললাইনের দশফুট দূরে দাঁড়িয়ে
মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল শেষ সময়ের চিন্তাগুলো -
আর তো মাত্র কয়েকটা মিনিট,
তারপরই
এই নশ্বর দেহ তালগোল পাকিয়ে জঞ্জাল হয়ে যাবে।
একরাশ ঘৃণা, কিছুটা বিরক্তি আর হয়তো অল্প করুণা মিশিয়ে
লোকজন বলবে, "কেন? কি হয়েছিল?"
কয়েকটা ঘরে, বন্ধুদের আড্ডায়
আর নিউজপেপারে স্থায়ী জায়গা হবে দুদিনের জন্য।
বাবা, মা, আর হয়তো অনেক দূরে বসে থাকা ওই মেয়েটা
নীরবে দু ফোঁটা চোখের জল ফেলবে;
কিন্তু বিশ্বাস ছিল, এই শেষ -
আর কখনো ওই চোখের জলের দাবী জানাবো না।

নাহ, পারিনি সেদিন;
ট্রেনটা এসে চলেও গিয়েছিল।
তারপর আরো বহুবার রেললাইনের ধারে দাঁড়িয়েছি,
বহু ট্রেন এল গেল,
একই চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেল।
তবু আজও একইভাবে রয়ে গেছি,
আজও আমি ব্যর্থ হই,
ওদের চোখে জল আসে,
সান্ত্বনা দেয়, বলে নতুন করে শুরু করতে;
পুরো জীবনটাই গেছে কেমন তালগোল পাকিয়ে,
ব্যর্থতা-অনুতাপ-সান্ত্বনা আর আবার নতুন করে বাঁচা -
নতুন করে ব্যর্থ হওয়ার জন্য;
বৃত্তাকারে ঘুরে চলেছে আমার পৃথিবী।
ব্যর্থ-পরিত্যক্ত-অবহেলিত হয়ে রয়ে গেলাম;
তবু আমার জঞ্জাল হওয়া হলো না।

Comments

Popular posts from this blog

An African Diary : A marvellous journey inside the Maasai Mara

A three-day affair with Mexico City

বিশ্বকাপ