Posts

Showing posts from July, 2014

অবাক আইন

(মূল কবিতা :  একুশে আইন ) হীরক রানীর আপন দেশে, আইন কানুন সর্বনেশে! রংবদলের আভাস পেলো, সরকারী সব জায়গাগুলো, নীল-সাদাতে রাঙাও ঘর -     ট্যাক্সে পাবে বিশাল ছাড় ।। সেথায় আইন ভাঙতে হলে, টিকিট কাটো রানীর দলে; ভাঙলে আইন বিনটিকিটে - মাওয়ের লেবেল লাগবে পিঠে, বড়ই কড়া হীরক রানী,     টানতে হবে জেলের ঘানি ।। কারুর যদি ইচ্ছে করে, চিটফান্ডের ব্যবসা করে, অল্প কিছু টাকার থলে, ঢুকতে হবে রানীর দলে, নাই যদি রও ওনার সাথে,     হাতকড়াটি পড়বে হাতে ।। অ্যাক্টো করে কেউ যদি চায়, প্রাইজ পাবে টপকে সবায়, হেথায় ভায়া সবই জোটে, জিতলে পরে বিপুল ভোটে, রানীর আশীষ থাকলে মাথায়,     ইমপসিবল কিছুই তো নয় ।। যে সব লোকে কমিক আঁকে, মজাচ্ছলে, কাজের ফাঁকে, মোসাহেবরা তাদের ধরে, একনিমেষে খাঁচায় পোরে, বেচতে বলে বাটি-ঘটি     ফাইন হবে কয়েক কোটি ।। কইলে কথা বিরোধ ক'রে, কন্সপিরেসির দাবী করে, কেউ যদি দেয় প্রমাণ এসে, সাংসদ নয়, গুন্ডা পোষে, চটজলদি খুঁজবে তাকে,     করবে লোপাট প্রমাণটাকে ।।

বিশ্বাস

আলোটা ক্রমশ এগিয়ে আসছে, আর এক এক করে ফুটে উঠছে সেই দিনগুলো। প্রথম যেদিন খবরটা শোনে - মাকে জড়িয়ে ধরে হাউহাউ করে কেঁদে উঠেছিল বছর পঁচিশের অন্তর্মুখী ছেলেটা তবু গভীর বিশ্বাসে বলেছিল "ও ঠিক ফিরে আসবে।" যেদিন শিয়ালদার হোটেলে মনমরা ছেলেকে দেখে থাকতে না পেরে বাবা বলে উঠল, "সব নিজের মধ্যে কেন চেপে রাখিস?" সেদিনও শুকনো হেসে ছেলেটা বলেছিল, "সব ঠিক হয়ে যাবে, দেখে নিও।" আর করুণমুখে সাহায্য চাওয়ায় যখন সেই মেয়েটা ভিখিরির মত দুরছাই করে বলল, 'আমাকে এসব বলা বন্ধ করো', তখনও কান্না চেপে বলেছিল, "আমি জানি, একদিন ভুল বুঝবেই।" আজ হাইওয়ে ধরে - আলোর দিকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে ছেলেটা। তুমি বলেছিলে ঠিকই ওকে বিশ্বাস করা যায় না, তবু ও এগিয়ে চলেছে আলোর দিকে। মনে একটুকরো বিশ্বাস - অন্ধকার কাটবেই; তুমি একদিন ফিরবেই ওর কাছে, আর আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখবে তোমরা। সবই নিয়তি! অন্তর্মুখী, বোকা, চাপা ছেলেটা বোঝেনি আলোর দিকে এগোলেই অন্ধকার কাটে না। আধ মিনিটের ব্যাপার - ছেলেটার সর্বস্বান্ত শরীরটা নিঃস্ব হয়ে গেল, স্বপ্নগুলো বেঁচে রইল স্বপ্ন হয়েই; শু

ঘুষ চুরি

(মূল কবিতা :  গোঁফ চুরি ) হেডঅফিসের বড়বাবু দিনের শেষে শ্রান্ত, ব্যাগ গোছাতে চেঁচিয়ে ওঠেন, "এইদিকে আয় কান্ত"। ছোকরা পি-এ কান্তচরণ হুঙ্কারেতে কাঁপে, ইতিউতি এপাশওপাশ পরিস্থিতি মাপে। শান্ত বসের কি যে হলো, পাল্টে গেল ভোল; হকচকিয়ে কান্ত শুধায়, "কে পাকালো গোল? ফায়ার করুন, সবায় জানান, ডাকব নাকি পুলিশ?" "লিগ্যাল প্রসেস? পাগল নাকি? হতচ্ছাড়া ফুলিশ!" "সাবধানেতে কইবি কথা, সবার ঘোরাঘুরি," বাবু বলেন ফিসফিসিয়ে, "ঘুষ গিয়েছে চুরি!" চমকে গিয়ে কান্ত ভাবে, এও কি হয় সত্যি! বাবুর ঘুষের প্রসাদ পেয়েই লাগছে গায়ে গত্তি। ঠিকই শুনি, দিন কখনো সবার সমান যায় না, ঘুষের টাকাও যাচ্ছে চুরি, কক্ষনো যা হয় না। রেগে আগুন তেলে বেগুন, ফুঁসে বলেন তিনি, "একশ মোটে এক প্যাকেটে, কে দিল কি জানি! জানলে পরে নিতুম না খাম, কে করে হাত ময়লা?! এই ক'টাকা নেয় তো শুধু পাড়ার মোড়ের গয়লা। লাগছে যেন দিনদুপুরে করলো আমায় জবাই, ঠিক সময়ে কাজ হাতিয়ে সুযোগ খোঁজে সবাই।" অনেক ভেবে বলেন, "এসব চলবে না আর হেথায়, ঘুষ মেরে কেউ পার পাবে না, যায় দেখি সব কোথায়! কাজের আ

আবোল তাবোল

(বহুদিন ধরে প্যারোডি লেখার চেষ্টা করার ইচ্ছে। তাই  এই বিখ্যাত কবিতা দিয়ে শুরু করলাম) আয়রে তোরা গুন্ডা যারা         টাঙ্গিখানি বাগিয়ে আয়, যেথায় যখন ইচ্ছে হবে         গলার নলি নামিয়ে আয়। আয় এখানে দাদার টানে         নাইকো চিন্তা নাইকো ডর, আয়রে হেথায় দাদার ছায়ায়         খুন বা জখম যাই না কর। আয় মা-বোন ঘুচিয়ে বাঁধন         তোদের পিছে মা আর মাটি, আসুক ওরা লালদলেরা         মাথায় বসাস রামদা-বঁটি। আমার দলের অসম্মান?         মাতবি তোরাও রঙ্গেতে, দল বেঁধে সব ঢুকবি ঘরে         করবি রেপ আজ ছন্দেতে।

ক্রিয়েটিভ

"আজকের এই ক্রিয়েটিভ রাইটিং প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছে . . ." সঞ্চালকের ঘোষণা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই স্টেজে উঠে এল ছেলেটা। শৌভনিক ব্যানার্জি। শান্তশিষ্ট চেহারার বাচ্চা ছেলে। পুরস্কার নেওয়ার পর দেখলাম সঞ্চালক ওকে কানে কানে কিছু একটা বলল। ছেলেটা আস্তে করে মাথা নেড়ে দেখলাম উইংসের ভেতর ঢুকে গেল। আসলে আমরাই বলেছিলাম যে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষ হলে ওর সাথে দেখা করতে চাই। ওর লেখা গল্পটা পড়েই মনে হয়েছিল ছেলেটার সাথে একবার দেখা করা উচিত। বাকি জাজেরাও একবাক্যে বলেন যে এরকম যে লেখে তার সাথে একবার দেখা করে লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দেওয়া উচিত। অনেকদিন পর এরকম কোনো জায়গায় জাজ হয়ে এসেছি। আমার একসময়ের ছাত্র সম্বিত অনেক জোর করায় আসতে বাধ্য হলাম। এসে দেখি আমি ছাড়া আরও দুজনকে এনেছে এরা। কিন্তু দুজনেই অনেক তরুণ। একে বয়স্ক, প্রবীণ, অভিজ্ঞতা বেশি; তার ওপর বহুদিন ধরে বাংলার সাহিত্যমহলে নাম রয়েছে। তাই বিষয় নির্ধারণ করার ভার আমার ওপরেই পড়েছিল। একটু ভেবে আমি বললাম একটা পরিচ্ছেদ দিয়ে দেওয়া হোক। তার ওপর লিখতে হবে প্রতিযোগীদের। কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প যার যা ইচ্ছে লিখতে পারে। বলা বাহুল্য, কে

অস্তরাগ

।। ১ ।। "তারপর রাজকন্যা মৈত্রেয়ীকে অত্যাচারী রাজা চন্দ্রনাথ জোর করে ধরে নিয়ে যায় বিয়ে করবে বলে। মৈত্রেয়ীর বাবা রাজা হলেও আসলে ছিলেন চন্দ্রনাথের অধীনেই। চন্দ্রনাথের বিরোধিতা করার মত লোকবল, বাহুবল বা মনোবল কোনটাই ছিল না তার। তাই এই অনাচারের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারলেন না তিনি। যথাসময়ে তাদের বিয়ে হয়। এদিকে মৈত্রেয়ীর জীবনে সুখ বলতে কিছু রইল না আর। সে তখন অসহায়ভাবে পথ খুঁজছে রাজার কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার। এসময় তার আলাপ হয় নীলাব্জ নামে একজনের সাথে। নীলাব্জ চন্দ্রনাথেরই বন্ধু, রাজকার্য চালাতে সাহায্য করত। শান্ত, বুদ্ধিমান, স্থিতধী নীলাব্জকে প্রথম দেখায়ই মৈত্রেয়ীর খুব ভালো লেগে যায়।" " স্থিতধী মানে কি যেন মা?" "মানে ও কাজের সময় খুব বুদ্ধি করে চলত আর যেকোনো বিপদ থেকে শান্তভাবে বেরিয়ে আসত।" "আচ্ছা, তারপর বলো . . . " "তারপর নীলাব্জর সাথে মৈত্রেয়ীর খুব তাড়াতাড়ি ভালো সম্পর্ক হয়ে গেল। আর মৈত্রেয়ীও ওর কাছে নিজের সব দুঃখের কথা খুলে বলল। নীলাব্জ ইতিমধ্যেই মৈত্রেয়ীকে খুব ভালোবেসে ফেলেছে। ওর এই কষ্টের কথা শুনে ঠিক করল চ