Posts

Showing posts from 2014

যুদ্ধজয়

(ফেসবুকের নিউজ ফিডে ভেসে ওঠা একটা পোস্ট থেকে অনুপ্রাণিত। দুর্ভাগ্যক্রমে পরে আর খুঁজে পেলাম না তাই কার পোস্ট বলতে পারলাম না। দুঃখিত)   "বেরিয়ে যাও, যেখানে ইচ্ছে যাও। খালি আমাকে আর জ্বালিও না। তোমার কেনা দাসী পাওনি যে যা চাইবে তাই হবে।" সজোরে মুখঝামটা দিয়ে বলে উঠল তিতলি। আমার সহধর্মিণী। তিতলি শব্দটার বাংলায় কোনো আলাদা অর্থ হয় কিনা ঠিক জানি না, হিন্দিতে মানে হল গিয়ে প্রজাপতি। তবে সেই বলে না 'কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন' কিংবা 'হাড় চামারের নাম কৃপাসিন্ধু'; এটা বোধহয় তার সার্থক উদাহরণ। আমার বৌয়ের নামটা যতই মিষ্টি হোক, প্রজাপতি যতই ফুলে ফুলে মধু খেয়ে বেড়াক, জন্মের পর এর মুখে কেউ নিশ্চয়ই ক্ষুর ছুঁইয়ে দিয়েছিল। একবার রেগে গিয়ে মুখ খুললেই মনে হয় যেন গায়ে চাবুক পড়ছে। বাক্যবাণে ফালাফালা করে দেয়। আজও সেই দশা। তাও পরিবেশ একটু লঘু করার জন্য বললাম, "তুমি রাগলে না হেব্বি দেখায় মাইরি। নতুন করে প্রেমে পড়ে যেতে ইচ্ছে হয়।" কিন্তু কপালে শনি নাচছিল সেটা সকালে উঠে খবরের কাগজ তুলতে গিয়ে যখন পাশের ফ্ল্যাটের ঝুনিবৌদিকে দেখি, তখনই বুঝেছিলাম। ঝুনিবৌদির সুনাম আছে পুরো কমপ্লেক্

ডিমের কিমা

শাকাহারী লোকজনের সাথে একযোগে রান্না করে ডিনার করার একটাই বোধহয় সুবিধে, বেশ কিছু নতুন রেসিপি ট্রাই করার ইচ্ছে জাগে। মানে সবজি-পাতি তো সেই 'থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়'। মাংসাশী লোকেদের কাছে যেরকম অনেক অনেক উপায় থাকে। একদিন মুরগি দিয়ে মুসল্লম, একদিন ট্যাংরা মাছের বাংলা ঝোল, অন্য একদিন ষাঁড়ের লেজের delicacy তো সপ্তাহান্তে হাঁসের রোস্ট কি ব্যাঙের পা ভাজা। কিন্তু এই শাকপাতা খাওয়া লোকজনের সাথে খেতে গেলে একই সবজি দিয়ে নতুন নতুন ডিশ বানানো ছাড়া আর গতি নেই। সেই সুবাদেই আজ একটা নতুন রান্না করলুম আর তারই ফল এই লেখা। প্রথমেই বলে রাখছি, ডিশটার নাম দেখে যতই ভুরু কোঁচকান না কেন, ডিম কিন্তু নিরামিষ জিনিস। দ্বিতীয় কথাটা হলো, এই রান্নার আইডিয়াটার জন্য একরাশ ধন্যবাদ গুগলের প্রাপ্য। তবে হ্যাঁ, রেসিপিতে নিজস্বতা অফ কোর্স রয়েছে। আর সবশেষে বলি, রান্নাটা এক দাদার সাথে হাত লাগিয়ে হয়েছে। সিংহভাগ কৃতিত্ব তারই পাওনা। তবে নেহাত সে গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত বলে লেখালিখি করে না, তাই ফাঁকতালে কেতা মেরে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগটা আমি পেয়েছি। তবে চাপ নেই, রেসিপি মেনে রান্নাটা করে ভালো লাগলে মন খুলে প্রশংসা করবেন, কিছুটা

ফিরে আসা

(একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে) মিনিট পঁচিশ আগেই সেজমামা ফোন করে জানিয়ে দিয়েছিল যে হাসপাতালের কাজ মিটে গেছে। শনিবারের বিকেল বলে অনেকেরই ভয় ছিল হয়তো আজ কাউকে পাওয়া যাবে না। কিন্তু ভাগ্যের জোরেই হোক, কি মামার প্রশাসনিক মহলে বিস্তর চেনাজানার সুবাদেই হোক, ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে পোস্টমর্টেম করে মৃতদেহ রিলিজ করে দিয়েছে হাসপাতাল থেকে। ফোনে কথা শেষ করে ছোটমামা খবরটা জানাতে মাসিদের পাড়ার সুকান্ত বলে একটু সবজান্তা টাইপের ছেলেটা সেটাই বলেছিল, "লাকি-লি আজই হয়ে গেল সবকিছু। এখন বডি নিয়ে এলেই তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়তে হবে।"  শুনে বেশ অদ্ভুত লেগেছিল। মৃত্যুর অব্যবহিত পরই যত নিকট আত্মীয়ই হোক না কেন, বাবা-মা-দাদা-বোন যেই হোক, সব সম্পর্ক মুছে দিয়ে নিজগুণে তারা 'বডি' হয়ে ওঠে। 'ছেলেটাকে কখন শ্মশানে নিয়ে যাবে' না বলে সবাই জিগ্যেস করে 'বডিটা কখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে'। কোনও কোনও শুভাকাঙ্ক্ষী আবার একধাপ এগিয়ে বলেন, 'এইবেলা বেরিয়ে গেলে ভালো, জলদি মিটে যাবে ওদিকে'।  অবশ্যই ! একজন যখন স্বার্থপরের মতন মারা যেতে পেরেছে, তার সবকিছু যত তাড়াতাড়ি মিটিয়ে দেওয়া যায়

অবাক আইন

(মূল কবিতা :  একুশে আইন ) হীরক রানীর আপন দেশে, আইন কানুন সর্বনেশে! রংবদলের আভাস পেলো, সরকারী সব জায়গাগুলো, নীল-সাদাতে রাঙাও ঘর -     ট্যাক্সে পাবে বিশাল ছাড় ।। সেথায় আইন ভাঙতে হলে, টিকিট কাটো রানীর দলে; ভাঙলে আইন বিনটিকিটে - মাওয়ের লেবেল লাগবে পিঠে, বড়ই কড়া হীরক রানী,     টানতে হবে জেলের ঘানি ।। কারুর যদি ইচ্ছে করে, চিটফান্ডের ব্যবসা করে, অল্প কিছু টাকার থলে, ঢুকতে হবে রানীর দলে, নাই যদি রও ওনার সাথে,     হাতকড়াটি পড়বে হাতে ।। অ্যাক্টো করে কেউ যদি চায়, প্রাইজ পাবে টপকে সবায়, হেথায় ভায়া সবই জোটে, জিতলে পরে বিপুল ভোটে, রানীর আশীষ থাকলে মাথায়,     ইমপসিবল কিছুই তো নয় ।। যে সব লোকে কমিক আঁকে, মজাচ্ছলে, কাজের ফাঁকে, মোসাহেবরা তাদের ধরে, একনিমেষে খাঁচায় পোরে, বেচতে বলে বাটি-ঘটি     ফাইন হবে কয়েক কোটি ।। কইলে কথা বিরোধ ক'রে, কন্সপিরেসির দাবী করে, কেউ যদি দেয় প্রমাণ এসে, সাংসদ নয়, গুন্ডা পোষে, চটজলদি খুঁজবে তাকে,     করবে লোপাট প্রমাণটাকে ।।

বিশ্বাস

আলোটা ক্রমশ এগিয়ে আসছে, আর এক এক করে ফুটে উঠছে সেই দিনগুলো। প্রথম যেদিন খবরটা শোনে - মাকে জড়িয়ে ধরে হাউহাউ করে কেঁদে উঠেছিল বছর পঁচিশের অন্তর্মুখী ছেলেটা তবু গভীর বিশ্বাসে বলেছিল "ও ঠিক ফিরে আসবে।" যেদিন শিয়ালদার হোটেলে মনমরা ছেলেকে দেখে থাকতে না পেরে বাবা বলে উঠল, "সব নিজের মধ্যে কেন চেপে রাখিস?" সেদিনও শুকনো হেসে ছেলেটা বলেছিল, "সব ঠিক হয়ে যাবে, দেখে নিও।" আর করুণমুখে সাহায্য চাওয়ায় যখন সেই মেয়েটা ভিখিরির মত দুরছাই করে বলল, 'আমাকে এসব বলা বন্ধ করো', তখনও কান্না চেপে বলেছিল, "আমি জানি, একদিন ভুল বুঝবেই।" আজ হাইওয়ে ধরে - আলোর দিকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে ছেলেটা। তুমি বলেছিলে ঠিকই ওকে বিশ্বাস করা যায় না, তবু ও এগিয়ে চলেছে আলোর দিকে। মনে একটুকরো বিশ্বাস - অন্ধকার কাটবেই; তুমি একদিন ফিরবেই ওর কাছে, আর আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখবে তোমরা। সবই নিয়তি! অন্তর্মুখী, বোকা, চাপা ছেলেটা বোঝেনি আলোর দিকে এগোলেই অন্ধকার কাটে না। আধ মিনিটের ব্যাপার - ছেলেটার সর্বস্বান্ত শরীরটা নিঃস্ব হয়ে গেল, স্বপ্নগুলো বেঁচে রইল স্বপ্ন হয়েই; শু

ঘুষ চুরি

(মূল কবিতা :  গোঁফ চুরি ) হেডঅফিসের বড়বাবু দিনের শেষে শ্রান্ত, ব্যাগ গোছাতে চেঁচিয়ে ওঠেন, "এইদিকে আয় কান্ত"। ছোকরা পি-এ কান্তচরণ হুঙ্কারেতে কাঁপে, ইতিউতি এপাশওপাশ পরিস্থিতি মাপে। শান্ত বসের কি যে হলো, পাল্টে গেল ভোল; হকচকিয়ে কান্ত শুধায়, "কে পাকালো গোল? ফায়ার করুন, সবায় জানান, ডাকব নাকি পুলিশ?" "লিগ্যাল প্রসেস? পাগল নাকি? হতচ্ছাড়া ফুলিশ!" "সাবধানেতে কইবি কথা, সবার ঘোরাঘুরি," বাবু বলেন ফিসফিসিয়ে, "ঘুষ গিয়েছে চুরি!" চমকে গিয়ে কান্ত ভাবে, এও কি হয় সত্যি! বাবুর ঘুষের প্রসাদ পেয়েই লাগছে গায়ে গত্তি। ঠিকই শুনি, দিন কখনো সবার সমান যায় না, ঘুষের টাকাও যাচ্ছে চুরি, কক্ষনো যা হয় না। রেগে আগুন তেলে বেগুন, ফুঁসে বলেন তিনি, "একশ মোটে এক প্যাকেটে, কে দিল কি জানি! জানলে পরে নিতুম না খাম, কে করে হাত ময়লা?! এই ক'টাকা নেয় তো শুধু পাড়ার মোড়ের গয়লা। লাগছে যেন দিনদুপুরে করলো আমায় জবাই, ঠিক সময়ে কাজ হাতিয়ে সুযোগ খোঁজে সবাই।" অনেক ভেবে বলেন, "এসব চলবে না আর হেথায়, ঘুষ মেরে কেউ পার পাবে না, যায় দেখি সব কোথায়! কাজের আ

আবোল তাবোল

(বহুদিন ধরে প্যারোডি লেখার চেষ্টা করার ইচ্ছে। তাই  এই বিখ্যাত কবিতা দিয়ে শুরু করলাম) আয়রে তোরা গুন্ডা যারা         টাঙ্গিখানি বাগিয়ে আয়, যেথায় যখন ইচ্ছে হবে         গলার নলি নামিয়ে আয়। আয় এখানে দাদার টানে         নাইকো চিন্তা নাইকো ডর, আয়রে হেথায় দাদার ছায়ায়         খুন বা জখম যাই না কর। আয় মা-বোন ঘুচিয়ে বাঁধন         তোদের পিছে মা আর মাটি, আসুক ওরা লালদলেরা         মাথায় বসাস রামদা-বঁটি। আমার দলের অসম্মান?         মাতবি তোরাও রঙ্গেতে, দল বেঁধে সব ঢুকবি ঘরে         করবি রেপ আজ ছন্দেতে।

ক্রিয়েটিভ

"আজকের এই ক্রিয়েটিভ রাইটিং প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছে . . ." সঞ্চালকের ঘোষণা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই স্টেজে উঠে এল ছেলেটা। শৌভনিক ব্যানার্জি। শান্তশিষ্ট চেহারার বাচ্চা ছেলে। পুরস্কার নেওয়ার পর দেখলাম সঞ্চালক ওকে কানে কানে কিছু একটা বলল। ছেলেটা আস্তে করে মাথা নেড়ে দেখলাম উইংসের ভেতর ঢুকে গেল। আসলে আমরাই বলেছিলাম যে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষ হলে ওর সাথে দেখা করতে চাই। ওর লেখা গল্পটা পড়েই মনে হয়েছিল ছেলেটার সাথে একবার দেখা করা উচিত। বাকি জাজেরাও একবাক্যে বলেন যে এরকম যে লেখে তার সাথে একবার দেখা করে লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দেওয়া উচিত। অনেকদিন পর এরকম কোনো জায়গায় জাজ হয়ে এসেছি। আমার একসময়ের ছাত্র সম্বিত অনেক জোর করায় আসতে বাধ্য হলাম। এসে দেখি আমি ছাড়া আরও দুজনকে এনেছে এরা। কিন্তু দুজনেই অনেক তরুণ। একে বয়স্ক, প্রবীণ, অভিজ্ঞতা বেশি; তার ওপর বহুদিন ধরে বাংলার সাহিত্যমহলে নাম রয়েছে। তাই বিষয় নির্ধারণ করার ভার আমার ওপরেই পড়েছিল। একটু ভেবে আমি বললাম একটা পরিচ্ছেদ দিয়ে দেওয়া হোক। তার ওপর লিখতে হবে প্রতিযোগীদের। কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প যার যা ইচ্ছে লিখতে পারে। বলা বাহুল্য, কে

অস্তরাগ

।। ১ ।। "তারপর রাজকন্যা মৈত্রেয়ীকে অত্যাচারী রাজা চন্দ্রনাথ জোর করে ধরে নিয়ে যায় বিয়ে করবে বলে। মৈত্রেয়ীর বাবা রাজা হলেও আসলে ছিলেন চন্দ্রনাথের অধীনেই। চন্দ্রনাথের বিরোধিতা করার মত লোকবল, বাহুবল বা মনোবল কোনটাই ছিল না তার। তাই এই অনাচারের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারলেন না তিনি। যথাসময়ে তাদের বিয়ে হয়। এদিকে মৈত্রেয়ীর জীবনে সুখ বলতে কিছু রইল না আর। সে তখন অসহায়ভাবে পথ খুঁজছে রাজার কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার। এসময় তার আলাপ হয় নীলাব্জ নামে একজনের সাথে। নীলাব্জ চন্দ্রনাথেরই বন্ধু, রাজকার্য চালাতে সাহায্য করত। শান্ত, বুদ্ধিমান, স্থিতধী নীলাব্জকে প্রথম দেখায়ই মৈত্রেয়ীর খুব ভালো লেগে যায়।" " স্থিতধী মানে কি যেন মা?" "মানে ও কাজের সময় খুব বুদ্ধি করে চলত আর যেকোনো বিপদ থেকে শান্তভাবে বেরিয়ে আসত।" "আচ্ছা, তারপর বলো . . . " "তারপর নীলাব্জর সাথে মৈত্রেয়ীর খুব তাড়াতাড়ি ভালো সম্পর্ক হয়ে গেল। আর মৈত্রেয়ীও ওর কাছে নিজের সব দুঃখের কথা খুলে বলল। নীলাব্জ ইতিমধ্যেই মৈত্রেয়ীকে খুব ভালোবেসে ফেলেছে। ওর এই কষ্টের কথা শুনে ঠিক করল চ

মেঘ-বৃষ্টি-রোদ্দুর

হাসি আনন্দ সুখে ভরা এক বসন্ত দিন শেষে - ফ্যাকাসে মেঘের সহসা হানা বিষণ্ণ বিকেল আসে। মনখারাপের ভ্রূকুটি আর দুশ্চিন্তার ভাঁজ ; রুক্ষ ধরার শুষ্ক চাউনি - 'বৃষ্টি আসুক আজ'। ক্লান্ত জীবন শ্রান্ত হয় তবুও মনে ভরসা, রাত পোহালেই ঘুচবে দুঃখ আসবে আবার বর্ষা।  

জঞ্জাল

সেদিনটা ভেবে আবার চোখের কোনটা জ্বালা করে উঠল। আর কিছুক্ষণই বাকি ছিল, প্রচন্ড বেগে ছুটে আসবে ট্রেনটা - দূরপাল্লার একটা এক্সপ্রেস। রেললাইনের দশফুট দূরে দাঁড়িয়ে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল শেষ সময়ের চিন্তাগুলো - আর তো মাত্র কয়েকটা মিনিট, তারপরই এই নশ্বর দেহ তালগোল পাকিয়ে জঞ্জাল হয়ে যাবে। একরাশ ঘৃণা, কিছুটা বিরক্তি আর হয়তো অল্প করুণা মিশিয়ে লোকজন বলবে, "কেন? কি হয়েছিল?" কয়েকটা ঘরে, বন্ধুদের আড্ডায় আর নিউজপেপারে স্থায়ী জায়গা হবে দুদিনের জন্য। বাবা, মা, আর হয়তো অনেক দূরে বসে থাকা ওই মেয়েটা নীরবে দু ফোঁটা চোখের জল ফেলবে; কিন্তু বিশ্বাস ছিল, এই শেষ - আর কখনো ওই চোখের জলের দাবী জানাবো না। নাহ, পারিনি সেদিন; ট্রেনটা এসে চলেও গিয়েছিল। তারপর আরো বহুবার রেললাইনের ধারে দাঁড়িয়েছি, বহু ট্রেন এল গেল, একই চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেল। তবু আজও একইভাবে রয়ে গেছি, আজও আমি ব্যর্থ হই, ওদের চোখে জল আসে, সান্ত্বনা দেয়, বলে নতুন করে শুরু করতে; পুরো জীবনটাই গেছে কেমন তালগোল পাকিয়ে, ব্যর্থতা-অনুতাপ-সান্ত্বনা আর আবার নতুন করে বাঁচা - নতুন করে ব্যর্থ হওয়ার জন্য; বৃত্তাকারে ঘুরে চলেছে আমা